ফুটপাত বাণিজ্যে পুলিশের সাথে আরিফ বাহিনী - সময় আমাদের ২৪

Latest

শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

ফুটপাত বাণিজ্যে পুলিশের সাথে আরিফ বাহিনী

ফুটপাত বাণিজ্যে পুলিশের সাথে আরিফ বাহিনী
জাবেদ এমরান : সিলেট নগরে ফুটপাত বাণিজ্যে বেপরোয়া সিটি করপোরেশন ও ফাঁড়ি পুলিশ। তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পৃক্ততায় জনসাধারণের চলাচলের ফুটপাত দখল করে ভাসমান ব্যবসায়ীরা এখন রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বীর দর্পণে করে যাচ্ছে ব্যবসা। পোস্টিং বাণিজ্যে ভাটা পড়ার আশঙ্কায় পুলিশ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা কালো চশমা ব্যবহার করে চলছেন। নগরীতে তীব্র যানজটের প্রধান কারণ সড়ক বেদখল হয়ে যাওয়ায়। অবৈধ দখলদারদের সড়ে যেতে মাইকে হাকডাকে ফুটপাত ফাঁকা রাখার দায়সারা আহবান এখন আর তেমন দেখা যায়না। ট্রাফিকপুলিশের হাকডাককে 'নাটকের রিহার্সেল' বলে মন্তব্য করেছেন পথচারী ও ব্যবসায়ীরা। আর মেয়রের হকার উচ্ছেদ অভিযানকে মিডিয়া কাভারেজের কৌশল হিসেবে দেখছেন বর্তমান সরকার দলীয় নেতারা।

ফুটপাত বাণিজ্যে পুলিশের সাথে আরিফ বাহিনী
এসএমপিতে থানা ৬টি, ফাঁড়ি, তদন্ত কেন্দ্র ও পুলিশ বক্স আছে ১০টি। তার মধ্যে এসআইদের পছন্দের শীর্ষে বন্দরবাজার ফাঁড়ি। সেখানে কাঁচা টাকা উড়ার ঘ্রাণে আশক্ত হয়ে জীবনের আখের গোছাতে স্বপ্ন দেখেন তারা। বিভিন্ন মহলের তদবিরের সাথে ৮/৯ লক্ষ টাকায় উপর মহলকে খুঁশি করে পোস্টিং নেয়ার রেওয়াজ চালু রয়েছে। যে'ই ফাঁড়ির দায়িত্ব পান তিনিই অনৈতিক কাজসহ ফুটপাত বাণিজ্যে বেপরোয়া হয়ে উঠেন।

ফুটপাত বাণিজ্যে অভিযোগের তীর সিটি করপোরেশন উপরেও রয়েছে। অনুসন্ধানে তার সত্যতা পাওয়া গেছে। সিসিকের মেয়রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনছার, গার্ড ও পরিচ্ছন্নকর্মীরা ফুটপাত থেকে সিটি করপোরেশনের নামে নিয়মিত চাঁদা আদায় করছেন। মেয়র অভিযানে বের হলে তারাই মুঠোফোনে অভিযানের খবর জানিয়ে দেয়। মুহূর্তে ফুটপাত ফাঁকা হয়ে যায়। অভিযানের পর পুনরায় ফুটপাতে বাজার বসে। আর সে কারনে অভিযান ফলপ্রসূ হয়না। 

ফুটপাত বাণিজ্যে পুলিশের সাথে আরিফ বাহিনী

সিলেট নগরের ক্বীনব্রিজের উত্তর প্রান্ত, জালালাবাদ পার্ক, জেলাপরিষদের সামন, 
সার্কিট হাউজ ও আদালতের সীমানা প্রাচীর লাগোয়া ফুটপাত, বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, রাজা জিসি স্কুল, পোস্টঅফিস, কালেক্টর মসজিদ, দূর্গাকুমার স্কুল ও হাসান মার্কেটের সামন সহ নগরের অধিক জনবহল এলাকা হকারদের দখলে রয়েছে। 

ওইসব এলাকায় রাস্তার উপর সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ফল, জামা-কাপড়, কম্বল, হাত ঘড়ি, জুতা-মুজাসহ নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যাদি ও মোবাইল সিমের দোকান এবং সন্ধার পর থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত শাক-সবজিসহ মাছের বাজার বসে। দু'বার ফুটপাতের হকারদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়। এক দোকানদারদের কাছ থেকে বিভিন্ন খাতে চারবার ২০/৫০ টাকা করে নেয়া হয়।

মহানগর হকার্স কল্যাণ সমবায় সমিতির তালিকাভুক্ত প্রায় ৩'শত জনের অধিক হকার ব্যবসা পরিচালনা করলেও এর বাইরে আরো অন্তত ভাসমান ২'শত হকার চাঁদা দিয়ে থাকে।

ফুটপাত বাণিজ্যে পুলিশের সাথে আরিফ বাহিনী
প্রতিদিন ক্বীনব্রিজের গোড়া থেকে পোস্টঅফিস, রেজিস্টারি মাঠের সামন থেকে কালেক্টর মসজিদ হয়ে জিন্দাবাজার পয়েন্ট ও হাসান মার্কেটের সামন থেকে শিশু পার্ক পর্যন্ত ফুটপাত থেকে কয়েক হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। প্রকাশ্যে হকাররা পুলিশ, সিটি করপোরেশনের নিরাপত্তকর্মী, গার্ড, পরিচ্ছন্নকর্মী ও হকার সমিতির গার্ডকে টাকা দিয়ে ফুটপাতে স্বাচ্ছন্দ্যে করে যাচ্ছে রমরমা ব্যবসা।

অপরদিকে, আদালতের নির্দেশনায় হকার মুক্ত ফুটপাত রাখার বিষয়টি চলমান দেখাতে সিটি করপোরেশন উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রেখে। যদিও অভিযান ঢিলেঢালা ও নামমাত্র হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরজমিন ১০ ফেব্রুয়ারি দুই যুবককে হকারদের কাছ থেকে চাঁদা নিতে দেখা যায়। কিসের টাকা আদায় করা হচ্ছে জিজ্ঞেস করলে এক পর্যায় তারা সিটি করপোরেশন আনসাদের হয়ে টাকা কালেকশনের কথা স্বীকার করে। মেয়রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য আব্দুল্লাহকে মুঠোফোনে অভিযোগের বিষয়টি জানালে তার নাম বেঁচে কেউ টাকা নিয়েছে বলে স্বীকার করেন। তার জন্য সরি বলে আর কখনও ভুল হবেনা বলে জানান তিনি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন